বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষিক্ষেত্রে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দেশ হওয়ার কথা। কিন্তু না, এখনো সেখানে পৌঁছাতে পারেনি। তবে আমাদের সবারই কমবেশি কৃষির ওপর জ্ঞান রয়েছে। একই জমিতে আমরা নানা ধরনের ফসল ফলাতে চেষ্টা করি। যত দ্রুত এবং যত ধরনের ফসল ফলাতে সক্ষম হই, ততই সেই জমির চাহিদা বেশি। এ বিষয় আমরা নিশ্চিত। অতীতে দেখা গেছে, এক জমিতে বছরে একটি ফসল ফলানো হতো, প্রযুক্তি ও চাহিদা বাড়ার কারণে এখন সেই জমিতেই একাধিক ফসল ফলানো সম্ভব হচ্ছে।
শিক্ষাপদ্ধতিতেও ঠিক অতীতে বিএ, এমএ পাস করলে চাকরি হতো, কিন্তু এখন সেটা সম্ভব হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে আমরা সব সময় লক্ষ করেছি কারিগরি শিক্ষা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার পাস করলেই চাকরি নিশ্চিত। অথচ সিম্পলি বিএ, এমএ পাস করলে চাকরি নেই। কারণ কী? কারণ, কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়া কিছু পড়া মানে সেই বিষয়ের ওপর সাধারণ জ্ঞান সৃষ্টি হয়। কাজ করতে হলে দরকার দক্ষতা, যা সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস। যদি বলি দরকার একজন বাবুর্চি, যে ইতালিয়ান খাবার রান্না করতে পারে। এখন যদি আমি বলি, আমি এমএ পাস, আমাকে কাজটি দিন। সম্ভব হবে কি কাজটি পাওয়া? এ ক্ষেত্রে দরকার ভোকেশনাল শিক্ষা। শুরু থেকে যদি প্রশিক্ষণের ধরন নির্ধারণ করা না হয়, তবে চাকরি পাওয়া কঠিন হবে। যার কারণে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, পুলিশ ইত্যাদি হতে হলে প্রশিক্ষণকে যেভাবে তৈরি করা দরকার, সেভাবে তৈরি করা হয়েছে।
কিন্তু শুধু বিএ, এমএ পাস করে চাকরির পেছনে ছুটলে চাকরি হবে না। যার ফলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে সেভাবেই গড়ে তুলতে হবে, যাতে চাকরি হয়। দেশের বয়স ৫০, অথচ এখনো সুপরিকল্পিত পরিকল্পনার অভাব, যার ফলে সঠিক পথে দেশকে এগোতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দেশের একটি মানুষ গৃহহীন থাকবে না, প্রতিটি ঘরেই বিদ্যুৎ থাকবে, আলো জ্বলবে। প্রতিটি পরিবারেই শিক্ষিত মানুষ থাকবে, লেখাপড়া শিখবে। সঙ্গে সঙ্গে ভোকেশনাল ট্রেনিং, কারিগরি শিক্ষা নিতে হবে এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। রাজনীতিবিদদের মুখের কথা এসব। এত বছর পর সরকার বেসরকারি কলেজে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স বন্ধ করতে উঠেপড়ে লেগেছে, যার ফলে ২০১৯ সাল থেকে নতুন কলেজে এসব কোর্সের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। চলতি বছর থেকে নতুন ভর্তিও বন্ধ হতে পারে। এমনটিও শোনা যাচ্ছে।
বেসরকারি কলেজে ১৯৯৩ সাল থেকে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সের অনুমোদন দেওয়া হয়। বাংলাদেশে এখন ৩১৫টি বেসরকারি কলেজে এই কোর্স চালু আছে। ২০০টি কলেজ সরকারি হয়ে যাওয়ায় তারা আর এর আওতায় পড়ছে না। কোর্সগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। আর এ পর্যায়ে পাঠদানের জন্য সাড়ে চার হাজারের মতো শিক্ষক আছেন। কিন্তু শিক্ষকদের কেউই এমপিওভুক্ত নন।
No comments:
Post a Comment